কোভিড ১৯ কোন ধরণের ভাইরাস?

কোভিড ১৯ কোন ধরণের ভাইরাস? কোভিড ১৯ হলো প্রাণঘাতী একটি ভাইরাস। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটির নতুন প্রজাতি ২০১৯ সালে চীনে উহান প্রদেশে প্রথম আবিষ্কৃত হয় এবং সেখান থেকে রোগটি মহামারী রূপে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। 
কোভিড ১৯ কোন ধরণের ভাইরাস
কোভিড ১৯ কোন ধরণের ভাইরাস

কোভিড ১৯ কোন ধরণের ভাইরাস?: উপস্থাপনা

এযাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক মহামারী রূপ ধারণ করেছিল কোভিড ১৯। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি বহু মানুষের জীবননাশ করেছে। বর্তমানে কোভিড ১৯ এর প্রভাব আগের চেয়ে কমে গেলেও পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি। কোভিড ১৯ কোন ধরণের ভাইরাস?, কোভিড ১৯ কতটা মারাত্মক এবং  কিভাবে এই ভাইরাসটি সারা বিশ্বে মহামারী রোগ হিসেবে ছড়িয়ে পড়ল? সে সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে।

কোভিড ১৯ কোন ধরণের ভাইরাস?: নামকরণ

প্রত্যেকটা রোগের আলাদা আলাদা নামকরণ করা হয় তাদের বৈশিষ্ট্য এবং বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে।কোভিড ১৯ এই রোগটির নামকরণ করা হয়েছে তিনটি শব্দের প্রথম অক্ষর দিয়ে। প্রথম শব্দটি হলো করোনা, শব্দ থেকে নেয়া হয়েছে কো। দ্বিতীয় শব্দটি হলো ভাইরাস, এই শব্দটি থেকে নেওয়া হয়েছে ভি।এবং তৃতীয় বা সর্বশেষ শব্দটি হলো ডিজিস, এই শব্দটি থেকে ডি নেয়া হয়েছে। 

উপরে উল্লেখিত তিনটি অক্ষরের সমন্বয়ে নামকরণ করা হয়েছে কোভিড। যেহেতু প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি ২০১৯ আবিষ্কৃত হয়েছিল তাই কোভিড শব্দের শেষে ১৯ যুক্ত করা হয়। এবং এই রোগটির নাম দাঁড়ায় কোভিড ১৯।

কোভিড ১৯ কোন ধরণের ভাইরাস?: করোনা ভাইরাসের লক্ষণ

কোভিড ১৯ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পূর্বে আপনাকে জানতে হবে যে করোনাভাইরাস কিন্তু নতুন কোন রোগ নয় এটি বহু পুরাতন একটি রোগ যা আবিষ্কৃত হয়েছিল ১৯৬৪ সালে লন্ডনের সেন্ট থমাস হাসপাতালের গবেষণাগারে যা আবিষ্কার করেছিলেন ড. আলমেইডা। সেই ভাইরাসটিরই নতুন রুপ আবিষ্কৃত হয়েছিল ২০১৯ সালে চীনের উহান প্রদেশে। 

করোনাভাইরাস এ কিছু লক্ষণ রয়েছে এই লক্ষণগুলো যদি কারো মাঝে দেখা যায় তাহলে হতে পারে যে তিনি কোভিদ ১৯ সে আক্রান্ত। তাই নিম্নবর্ণিত কোন লক্ষণ যদি কারো মাঝে দেখা যায় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। চলুন দেখে নেয়া যাক করোনা ভাইরাসের লক্ষণ গুলো। 

করোনা ভাইরাসের লক্ষণ গুলো নিম্নরূপ:
শুষ্ক কাশি। নভেল করোনা ভাইরাস এর প্রথম ও প্রধান লক্ষণ হলো শুষ্ক কাশি। যখন কোন ব্যক্তি  করোনাভাইরাস আক্রান্ত হবে তখন প্রচুর পরিমাণে শুষ্ক কাশি হবে এবং এই কাশির মাধ্যমে এই রোগটি অন্য ব্যক্তিদের কাছে সংক্রমিত হতে পারে। 

তবে কাশি হলেই যে তা করোনাভাইরাস তা কিন্তু নয়। অন্য কোনো কারণেও কাশি হতে পারে বা সাধারণ কাশিও হতে পারে। তাই কাশি হলে সেটাকে করোনাভাইরাসের লক্ষণ বলে দেয়া উচিত নয়। যদি আপনার কাছে শুষ্ক কাশি সন্দেহজনক মনে হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। 

জ্বর। করোনাভাইরাস আক্রান্ত আরেকটি অন্যতম লক্ষণ হলো জ্বর। শরীরে যদি প্রচুর পরিমাণে জ্বর থাকে এবং সেইসাথে শুকনো কাশি থাকে তাহলে হতে পারে এটি করোনাভাইরাস এর অন্যতম লক্ষণ।তাই যদি আপনার জ্বর হয় এবং সেটি দীর্ঘসময় ধরে থাকে এবং প্রচণ্ড আকার ধারণ করে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা নিশ্চিত করবেন। 

শ্বাসকষ্ট। করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম একটি লক্ষণ হলো শ্বাসকষ্ট হওয়া। উপরোল্লিখিত দুটি লক্ষণ জ্বর এবং শুষ্ক কাশির সাথে যদি শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকে। তাহলে তা অবশ্যই দুশ্চিন্তার কারণ এবং এই সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। এবং যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে যে আপনার কভিড ১৯ হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে। 

মুখ ও নাকের স্বাদ হারিয়ে যাওয়া। যদি কোন ব্যক্তি কোভিড ১৯ আক্রান্ত হয় তাহলে তার মুখের স্বাদ ও নাকের গন্ধ বিনষ্ট হয়ে যায়। সুতরাং যদি কারো হঠাৎ করে নাকের গন্ধ ও মুখের স্বাদ নষ্ট হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই তার উচিত হবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া। কেননা মুখের স্বাদ ও নখের গন্ধ নষ্ট হয়ে যাওয়া করোনাভাইরাস এর অন্যতম একটি লক্ষণ। 

শরীর দুর্বল হয়ে পড়া। উপরোল্লেখিত লক্ষণ গুলির সাথে যদি শরীর দুর্বলতার লক্ষণ থাকে অর্থাৎ শরীর প্রচুর পরিমাণে দুর্বল হয়ে পড়ে তাহলে হতে পারে এটি করোনাভাইরাস এর আরেকটি অন্যতম লক্ষণ তাই এধরণের সমস্যায় পড়লে অবহেলা না করে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

অবসাদ। যদি কোন ব্যক্তি কোভিড ১৯ আক্রান্ত হয় তাহলে তিনি অবসাদগ্রস্ত হতে পারেন কেননা অবসাদগ্রস্ত হওয়া করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম একটি লক্ষণ। আই এ ধরনের লক্ষণ যদি কোন মাছে দেখতে পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই তাকে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। 

বমি হওয়া। করণায় আক্রান্ত হলে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ দেখতে পাওয়া যায় সেটা হল বমি হওয়া যদি উপরের লেখাতে লক্ষণগুলোর সাথে হওয়ার সমস্যা থাকে তাহলে হতে পারে তার কোভিড ১৯ এর অন্যতম একটি লক্ষণ।

গলা ব্যথা। কোভিড ১৯ কোন ব্যক্তি যদি আক্রান্ত হয় তাহলে তার গলা ব্যথা হতে পারে কেননা গলা ব্যথা হওয়া করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম একটি উপসর্গ যদি জ্বর শুকনো কাশির সাথে গলা ব্যথা থাকে তাহলে অবশ্যই তাকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। 

মাথা ব্যথা। জ্বর, শুকনো কাশি, দুর্বলতা, অবসাদ ইত্যাদি লক্ষণ এর সাথে যদি মাথাব্যথা থাকে তাহলে তা হতে পারে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম লক্ষণ সুতরাং ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। 

পেটের সমস্যা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হলে পেটের সমস্যা দেখা দেয় তাই পেটের সমস্যা করোনাভাইরাস এর উপর আরেকটি লক্ষণ। তবে করণাভিরুস আক্রান্ত হলে সবসময় পেটের সমস্যা নাও থাকতে পারে। 

কোভিড ১৯ কোন ধরণের ভাইরাস?: রোধের উপায়

  • নিয়মিতভাবে প্রতিদিন প্রতি ২ ঘন্টা পর পর হ্যান্ডওয়াশ/সাবান পানি দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত কি হবে।
  • সাধারণত হাত দিয়ে নাক চোখ ও মুখ পরিষ্কার করা বন্ধ করতে হবে এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে কখনোই ময়লা হাতে নাক ইত্যাদি স্পর্শ করা যাবে না।
  • হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় অবশ্যই প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। যদি রুমাল ব্যবহার করেন তাহলে অবশ্যই সেটি প্রতিদিন ভালোভাবে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। যদি হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় রুমাল বা টিস্যু না থাকে সে ক্ষেত্রে হাতের কনুইয়ের সাহায্যে নাক-মুখ ঢেকে ফাঁসি দিতে হবে।
  • বাসাবাড়ি প্রতিদিন জীবাণুনাশক পাউডার কিংবা অন্য কোন জিনিস দিয়ে প্রস্কার করতে হবে সম্ভব হলে বাড়ির পাশে সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। এবং নিজে সবসময় পরিষ্কার থাকতে হবে।
  • ব্যবহার্য কোন জিনিস যেমন কাপড়-চোপড় ভালোবাসা ইত্যাদি অন্য কারো সাথে শেয়ার না করা এবং অন্য কারণ জামা কাপড় নিজে ব্যবহার না করা।
  • জানালা দরজা সব সময় খোলা রাখার ঘরোয়া পরিবেশে রাখা যাবে না। সবসময় যেন ঘোরের মধ্যে আলো-বাতাস ইত্যাদি প্রবেশ করে সেই বিষয়টি সবসময় নিশ্চিত করতে হবে।
  • যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে এবং প্রাকৃতিক ভাবে যে আলো-বাতাস হওয়া যায় তাদের থাকার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
  • ব্যবহৃত জুতা স্যান্ডেল বা সবসময় যে জিনিস গুলো ব্যবহার করা হয় সেগুলো অবশ্যই ঘরের বাইরে রাখতে হবে এবং নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
  • বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান যেখানে জনসমাগমের আশঙ্কা রয়েছে এ ধরনের অনুষ্ঠান পরিহার করার করতে হবে এবং নিজের পরিবারকে সে অনুষ্ঠানগুলোতে যেতে দেওয়া যাবে না।
  • গর্ভাবস্থায় এবং ৭০ বছর বয়সের বেশি যেসকল লোক রয়েছেন তাদেরকে অবশ্যই সব সময় বাসার ভিতরে অবস্থান করতে হবে

Next Post Previous Post